Tue 28 October 2025
Cluster Coding Blog

কবিতা সিরিজে অঞ্জলি দে নন্দী, মম

maro news
কবিতা সিরিজে অঞ্জলি দে নন্দী, মম

১| আজকের অঞ্জলি আমার

আমার হাতে শাণিত খড়্গ। অসুর-শোণিত আমার অর্ঘ্য। কলুষিত মর্তকে বানাবো পবিত্র স্বর্গ। আমি আজকের নারী। সহ্যের সীমা আজ হয়েছে শেষ। ধৈর্যের বাঁধ আজ ভেঙেছে। আর দেব না অশ্রু অঞ্জলি। সব দ্বিধা ছাড়ি এবার করব নারী-খাদক বলী। রক্ষা করব আপন আভ্রু-বেশ। মুঠোয় ধরে দানবের কেশ ছিন্ন করব শয়তানী-মাথা। ধর্ষকের মৃত দেহে ফেলবো আমার পায়ের পাতা। নৃশংসের কাটা মুণ্ডু নিয়ে ফুটবল খেলবো। হ্যাঁ, দেবী কালি আমার মাতা।

২| আমিই সেই সে

মর্তকে তুই বানিয়েছিস নরক। গন্দা করেছিস তুই সকল সৎ সড়ক। আর্তনাদ করে আজ ধরা-মাতৃ-ভূঁই। হ্যাঁ, আমিই সেই সে প্রাণ যে করবে সকল প্রাণের ত্রাণ। আমার আত্মার চেষ্টা আপ্রাণ। তা আজ আমার মনকে করেছে পাষাণ। আমার কর্ম ছিল না আসান। জীবনের অমূল্য সময় দিয়েছিলাম বিসর্জন। করেছিলাম অন্তরের সকল আশা বর্জন। হয়েছিলাম আপন পণে নির্ভয়। এ ভাবেই আমি করেছি আজ অর্জন আমার প্রতিজ্ঞা রক্ষার শক্তি। আদর্শ, বিবেক, মনুষ্যত্বের ভক্তি আমায় এগিয়ে নিয়ে যায় অনন্তের দিকে আপনিই, নিজে। হৃদয় স্পন্দন আজ গায় সেই সে বৈদিক মন্ত্র যা ধ্বংস করেছিল রক্ত বীজে। মস্তিষ্ক আজ ধারণ করেছে আমার চিরআত্ম বিশ্বাসের শ্রী কালী যন্ত্র। অশেষ আশিসে ধন্য আমার দেহ তন্ত্র। আমার তৃতীয় আঁখির দৃষ্টি নয় কভুই থামার... এই করছে মানবিকতার উদাহরণ সৃষ্টি।

৩| তোমাদের আমি থেকে

তোমরা ঢেলে দিয়েছিলে নির্যাতন অঢেল, আমার জীবনের চলার পথে। মোটেই তা অল্প না। খেলেছিলে অত্যাচারের নির্মম খেলা। আমি সব তা তুলে নিয়েছিলাম, আমার মন-রথে। বানিয়েছিলাম তা দিয়ে আমার আগামীর পরিকল্পনা। এখন তো তা বাস্তবিত, "যত মত তত পথ" - এ। তোমাদের যত কু-জল্পনা, যা ছিল আমায় জন্য সব, অতীতে, গতে, আজ পরিবর্তীত তা আমার সৎ - এ। তোমরা বিজয়ীর হাসি হেসেছিলে আমার আশাহতে। সেদিন আমি কেঁদেছিলাম, শিরনতে। আজ আমার আমি সেই তোমাদের দেওয়া কষ্ট বদলে করে নিয়েছে প্রজ্বলিত সবিতা, স্পষ্ট। আমার কর্ম করেনি তা নষ্ট। যত্নে করেছে সে সবের পরিবর্তন। আমি এনেছি আমার মনে অনন্ত বিবর্তন। আজ তোমরা আক্ষেপ কর, নিজেদের পরাজয়ে। আর আমার জীবন সমৃদ্ধ আজ অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ে। কান্না নয়, আজ আমি রোজ বাঁচি হাসির পরিচয়ে। আত্ম তৃপ্তির ঐশ্বরিক জয়ে।

৪| আজ নারী আমি

আজ নারী আমি এই সে। যে আত্মসম্মান রক্ষায় জাগ্রতা। সোনার বরণ, কাজল নয়না হরিণী নয়। যার মাংস তোদের ভক্ষণের জন্য। আজ প্রকাশ্য আমরা ব্যাঘ্রতা। আগের মত আর আমি নেই সে। আমি এখন ধর্ষকের মৃত্যু ভয়। নর পশু, তোরা নগন্য! তোদের রক্তে হবে আমার খড়্গ ধন্য। অত্যাচারের হিসেব হবে তোদের আজ জমানো যত অতীতের সেই সে। এখন আমিই আমার সৌভাগ্য স্বামীনী। আমি আর এখন নই তোদের নীচ ভোগের কামিনী। আমার সময় এখন অসুর ধ্বংস কারিনি। শ্রী শ্রী কালী মাতার পূজ্য অমাবস্যা যামিনী। নির্যাতনকারীর ছিন্ন শির আমি আপন করে বই। খণ্ডিত মুন্ড মালায় আমি সজ্জিতা রই। আমার নারীত্ব হুঙ্কারে বলে, মাভৈ! আমার শক্তি দিয়ে গড়া সুসৃষ্টির নাভৈ। ইয়েস, আমি ফুকারী আজ, ওরে ও নারী সমাজ! নিজের সম্ভ্রম রক্ষা করা তোরই আপন কাজ। জলাঞ্জলি দে তোর যত ঐ সংকোচ, লাজ! আপন দক্ষতায় কর জগতে তুই রাজ! ইয়া দেবী সর্বভূতেষু দানব সংহার রূপেন সংস্থিতা। জ্বালা তোর আভ্রু নষ্টকারীর দাউ দাউ চিতা! হ্যাঁ, আজ এই নারীই আমি উপস্থিতা। আমিই এই এখনের শ্রীদুর্গা, শ্রীকালী, চিরাপরাজিতা।

৫| উসখুস করে আজও

দিল্লীতে আমি এখন, থাকি। কী যেন আজও রয়ে গেছে বাকী! পৌষ এলে আজও আমার, মনটা করে উসখুস উসখুস। ক্যালেন্ডার দেখায় পৌষ। আজও মনে পড়ে, যখন ছিলুম বাবার ঘরে, বাংলার মধ্যবিত্ত পরিবারে, তখন বাবা আমার মুখে দিত, জয় নগরের মোয়া। পাঁচ পোওয়া। আর বলত, " বড় রানী মা! খা রে! " আর আমার মুখ চলতই, চলত..... এখন তো রেস্টুরেন্টে বসে খাই, কেএফসি, চিকেন, হাই ক্লাস! টেষ্ট! আরে বাস! তবুও এর সাথেও চাই, সেই সে মোওয়া। কোন সে সুদূরে গেছে খোওয়া, অতীতটি আমার, সেই যে? ! বড় মধুর, ও সে! কিন্ত, বাবা আমার, আর নেই সে! তবুই সে মোর সামনেই যেন আছে - খুব কাছে, আমার দিকে চেয়ে রয়েছে যেন সে বসে।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register