- 6
- 0
আমাদের সামনে ছড়িয়ে আছে ভাঙা আয়নার টুকরোগুলো। -- কী দেকচো? -- একটা আয়না ভেঙে চৌচির হয়ে পড়ে আছে। --- একটা টুকরো তোল তো দেকি? উঁহু, সাবদানে কুড়োও গো, দেখো, হাত না কেটে যায় ফের। --- বেশ, এই তো তুললাম, এবারে বলো। --- কটা তুললে? -- একটা --- এটা কি একটাই মাত্র আয়না? নাকি একটা আয়নার অনেকগুলো টুকরো ভেতর একটা টুকরো মাত্র? -- হ্যাঁ, একটা টুকরো। --- এটাকে কি এখন আর আয়না বলবে ঠাকুর! একটা সাধারণ কিছুকে কীভাবে অসাধারণত্বে দাঁড় করিয়ে দেওয়া যায় সেটা দেখছি, -- এটা একটা আস্ত আয়নার ভেঙে যাওয়া একটা অংশ কিন্তু এটাও একটা গোটা আয়না। -- এ জন্যিই তোমায় গড় করি গো ঠাকুর। কুব সাদারণ একটা কতা, কিন্তু সেটাও যেন একটা অসাদারণ কতার মদ্যে মিশে তেকে অসাদারণ হয়ে উটলো। এবারে তোমার কতাটা বুইজে বলো গো... -- কাকে বোঝাবো! তোমাকে? বরং তোমার থেকেই শুনবো। আমি হয়তো বুঝি, কিন্তু আমি ব্যাখ্যা দেওয়ার ক্ষমতা রাখিনা গো বাউলদিদি। তবে শুনেছিলাম তৈত্তিরীয় উপনিষদে এর ব্যাখা আছে। --- তুমি সব জানো গো ঠাকুর, কিন্তু আমার পরীক্ষা নেবে বলে ছল করচো। জানো ঠাকুর, একটা মজার কতা বলি। কী জানি কেন সেদিন যকন মাদুকরী কত্তে বেরিয়েচি, জয় রাদে বলে বামুনদিদির দোরে গে দাঁইড়েচি, বামুনদিদি একগাল হাসি নে বেরোতে গেচে, হাতে একতাল একটা মিচরির তাল । তাদের মাটির মেজে সবে পাকা হয়েচে। তা দরজার চৌকাটে পা আটকে হুঁমড়ি খেয়ে পড়লেন সেই বাদানো মেজেতে। তার কিছু হলো না বটে কিন্তু মিচরির তাল গেলো গুঁড়োগুঁড়ো হয়ে। তিনি উটে বসে মেজের তেকে সেই গুঁড়োগুলো কুড়িয়ে আঁচলে ভরলেন। সামনে এসে বললেন, হ্যাঁরে কিষ্ণা, ভেবেচিলাম পিতিবি দেবো তা দরে দিলাম শিশিরের বিন্দু। কিন্তু, ওই শিশিরবিন্দুর বুকে তাকিয়ে দ্যাক, পিতিবি দেকতে পাবি।
ক্রমশ...
0 Comments.