Tue 28 October 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে প্রদীপ গুপ্ত (পর্ব - ৩৬)

maro news
সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে প্রদীপ গুপ্ত (পর্ব - ৩৬)

বাউল রাজা

ঈশ্বর ফুল দে তার মনরে সাজান, ফুলও তাই রঙে রূপে গন্দে সেইজে ওটে আপনার আনন্দে। পাপড়িতে পাপড়িতে তুলে দরে তার পবিত্ততার বিজ্ঞাপন। পদীপদাদা, যতোবার তোমার গান শুনিচি, ততোবারই আমার মনে লিয়েচে, তোমার গানের মদ্যে দে তুমি তোমার অন্তরের পেম যাকেই নিবেদন করো না কেন, সে নিবেদন কখন যে পূজা হয়ে যায় সে বোদয় একমাত্তর তিনিই বোজেন। কানাইদার কোটরাগত দুচোখে ঝর্ণাধারা। --- কেন জানিনে, তোমার গান শুইনলে পরে আমারও তাকে ডাকার কাজ হয়ে যায় গো। তোমার মগন হইয়ে থাকাটার বেতর দিয়ে তুমি যে শুদু নিজেরে সমপ্পন করো তাই লয় গো, সবাইকেই তার দুয়ারে পৌঁচে দাও। --- একদম আমার মনের কতাটাই বইললে গো কানাইবাউল, মাঝি যেমন নৌকোয় কইরে একা নিজেকেই লদী পার করান না, লোকোর সমস্ত যাত্তিকেও পৌঁচে দেন পারে, পদীপদাদার গানও সেরকমটা। গানের বেতর দে যেন তাঁর বাগানের দরজায় নে গিয়ে দাঁড় কইরে দেন সব্বাইকে। -- আমাকে একটু বলার সুযোগ দেবে তোমরা? এ যেন এক আশ্চর্যরকমের ভূমি গো। আমি জানিনা তোমরা যে গানের কথা বলে এতো প্রশস্তি করছো, সে গান কি আদৌ আমি গাইলাম কি না! এ গানের বাণী, এ গানের সুর, কোনোকিছুই তো আমি আগে জানতাম না। এর আগে কোনোদিন এ গান আমি গাইওনি। রোদ্দুরেরও একটা আবছা রূপ আছে গো পদীপদাদা। যকন লদীর ধারে দাঁইড়ে দিগন্তের পানে দেকপে তকন কাচের গাচপালাগুলো যেন তোমার অন্তরের মতো সবুজ গো। আর যতো দূরে দিষ্টি দেবে, দেকপে যেন ওই সবুজগুলোই ধোঁয়ার মইদ্দে মিশে যাচ্ছে। শেষে আর কিচুই নেই। এক এক জনের দিষ্টিশক্তি একেক রকমের বইলে দিগন্তরেখার বিস্তারও একেক রকমের গো। যারা অন্তর দে দেকার চেষ্টা চালায় তাদের কাচে দীগন্ত এসে মাতা নোয়ায়। তোমার দীগন্তের কোনো সীমা নেই গো। তাইতো তোমার গানে ঈশ্বর এসে বাসা বাঁদেন গো ঠাকুর। অপরাদ নিও না গোঁসাই, তোমার কথাই যদি সত্য হবে তালেপরে তুমি এই রোদ্দুরের আবছা রূপ কীবাবে দেকচো বলো দিনি? আমার মুখের কথাটা কেড়ে নিয়ে বিশু বাউল বলে উঠলেন। কারোই নিজের দিষ্টিশক্তি বলে কিচু হয় না গো। তিনি যারে যেমনটা দেকান সে সেরকমটাই দেকে গো গোঁসাই। চোক থাকলেও দেকপে না থাকলেও। এই দেকাকে অন্তদ্দিষ্টি বলে গো। সেই অন্তদ্দিষ্টির জোড়েই তুমি আলোছায়ার খেলা তোমার অন্তরে দেকতে পাও। পদীপদাদার গানও ঠিম তেমনিবাবেই দিষ্টির অনেক বাইরে গে তেনার চরণতলে ফুল হয়ে ফুটে ওটে। কৃষ্ণভামা এগিয়ে এসে আঁচল গলায় দিয়ে বিশুবাউলের চরণ ছুঁয়ে, কানাইদাকে প্রণাম করে আমার দিকে এগোতেই আমি দুহাত বাড়িয়ে দিলাম বাউলনির দিকে... ক্রমশ
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register