গদ্য কবিতায় নবকুমার মাইতি
কবিদেরই ঘর পোড়ে
কোন এক সমব্যথী সুজন কবি সম্মেলনে বলেছিল দেখো ভাই- 'কবিদেরই ঘর পোড়ে'
একটি নিটোল কাব্যের জন্য যাপন বিনিদ্র রজনী
ক্ষয়িষ্ণু পরমায়ু, তিলে তিলে শ্রমে ঘামে
দেহ পুড়ে কাঠ-কয়লা, ছাই থেকে বিভূতি
কয়লায় নিমজ্জিত অগ্নি থেকে তৈরি হয়
একটি মনন ঋদ্ধ শাশ্বত কবিতা-
হৃদয় মাটির গর্ভ ছুঁয়ে যায় অলৌকিক আলো
একটি নরম আভা অঙ্কুরের দুঃসাহস আনে
আজ যখন সময়ের সরণিতে প্রৌঢ়ত্বের সীমায়
বুকের মাঝ বরাবর টনটন করে ওঠে। অজানিত
কোন এক প্রলম্বিত ছায়া হাতছানি
দিয়ে যায় অনির্দেশ্য জগৎ সন্ধানে, বিষাদের
না জোৎস্নার, বড়ই অচেনা
সৃষ্টি স্থিতি লয়, ঐশ্বর্য মাধুর্য
প্রেম-প্রীতি প্রিয়তমা, বিলাস বাৎসল্য
সময়ের সরণিতে হয়তোবা সম্রাট, নয় ফকির
সব যেন কোথায় হারিয়ে যায়, অদূরে বজ্রপাত!
মাঝপথে অশ্বারোহী সময় নিরন্তর কেড়ে নেয়
জাগতিক সম্বল যা সত্য এবং সমাহিত
রাত্রি ক্রমশ নিবিড় হলে ছন্দপতন
মাথার উপরে মহাকাশ হাতছানি দেয়
অবিরাম তৃষ্ণা নিয়ে কথা বলে দূরের সমুদ্র
কেউ কেউ লুফে নেয় অলৌকিক চাবি
অনন্ত আত্মর মুখোমুখি দাঁড়াই
মৃত্যুর আগে প্রেমের লেলিহান শিখায়
পুড়েছো কি কেউ, দহনের সমীকরণ
মৃত্যুর গহীন সুড়ঙ্গে ঢোকার মুখে
চলমান কালের ক্যানভাসে ভেসে ওঠে
কিছু নিরালম্ব বেদনা, কিছু অপ্রাপ্তি
ঐহিক জীবনের যাবতীয় কথা ও কোলাজ
মরমী স্মৃতি এবং কিছু আত্মপরিচয়!
0 Comments.