Sat 01 November 2025
Cluster Coding Blog

কবিতায় স্বর্ণযুগে সুব্রত ভট্টাচার্য (ঋক তান) (গুচ্ছ কবিতা)

maro news
কবিতায় স্বর্ণযুগে সুব্রত ভট্টাচার্য (ঋক তান) (গুচ্ছ কবিতা)

পত্র প্রেরণ

প্রিয় রাই
কেমন আছো?
এখন গতানুগতিক প্রশ্ন করে তোমায় আর বিব্রত করবো না,
তবে তোমায় চিঠি কি লিখবো তাই ভাবছি
যেদিন তোমাকে প্রথম দেখে ছিলাম তোমার গ্রামে
গিয়েছিলাম, গোধূলি
বেলায় নদীর কিনারায় তুমি যখন এসে দাঁড়ালে রাঙা আলোয় ক্ষণিকের জন্য কিছুটা হলেও ভুল করে ফুল হয়ে ফুটলে।
সেই ফুল যাকে স্পর্শ করিনি শুধু দূর থেকে অনুভব করেছি।
সেই দিন থেকে অনুভূতির নিয়ন আলোয় অন্তরে এঁকেছি
তোমার মুখচ্ছবি।
হয়তো সেদিন ছিলো না আমার কোনো যোগ্যতা
ফুল ফোঁটাবার।
তবুও স্বপ্ন, তোমার ঠিকানায় পত্র পাঠাবার।
রাই!
তোমার ভালোবাসা পেলে-
চাঁদ যেমন খেলতে খেলতে আঁধারে লুকিয়ে যায় ঠিক
তেমনি হাসতে হাসতে স্বচ্ছ সীলমোহরের লাল ফিতে
বাঁধানো উইলে লিখে যাবো জীবনের ছাড়পত্র।
রাই!
আমি তোমার সেই অনিমেষ হবো,
ভালোবাসার দীর্ঘায়ু কামনা করে নতুন এক
তাজমহল গড়ে যাবো
এক চুম্বনে দেব হাজার বছরের আয়ুষ্কাল
তুমি একবার বলে দেখো ভালোবাসি-
হাতের মুঠোয় নিঃশ্বাসটুকু নিয়ে জীবনের রেসে প্রথম হবো,
নাম লিখিয়ে নিব ইতিহাসের পাতায়।
শুধু একবার বলো ভালোবাসি…….
বলবে তো আমায়………..
ইতি
তোমার ই নীল।


প্রিয় রাই
নীল নিশান

প্রিয় রাই
আমার উপন্যাসের পাতায় জায়গা
দিলাম তোকে
একমুঠো প্রেম উপহার দিস তোর
অগোছালো ভাষায়
হাজার কাজের মাঝে আমায় নিয়ে একটু ভাবিস ।

আমাকে তোর সঙ্গে নিবি?
এই ধর মেঘ যতটুকু দূরত্ব চাইবে,ঠিক
ততোটুকু দূরে আমায় সঙ্গ দিস।

কথা দিলাম,ফেরার পথে একবারও
বায়না করবো না,শুধু শাড়ির
আঁচলখানা ধরতে দিস,
বৃষ্টি হয়ে তোর পেছন পেছন বাড়ি ফিরবো।
কোন এক গোধূলি বেলায়
ধূলো ওড়া মাঠের সোনালী খেলায়,

পলাশের রক্তীমা মেখে-
অস্তগামী সূর্যকে বলবো
আমি আসবো এই ধুলোর পথে
তুই চন্দ্রালোকে
অপেক্ষা কর,সাথে নিয়ে
অনুভূতি, রুপকথায় কবিতা হয়ে।

এখনো তোকে নিয়ে
একটা প্রেমের কবিতা লিখতে ইচ্ছা করে!
যে কবিতাটায় কোন বিরহ থাকবে না।

পুরোটা জুড়ে তুই আর আমি থাকবো।
বিষাদের কোন আভাস থাকবেনা!

চাপা কোন দীর্ঘশ্বাস থাকবেনা!
অবিশ্বাস থাকবেনা!থাকবেনা কোন অপ্রিয়
অসত্য অপ্রেমের বর্ণ !?

সুখ তুমি অন্য শহরে

একটা সময় ভেবেছিলাম
কষ্টের ওপারে দাঁড়িয়ে মনে করেছিলাম
একসময় মানিয়ে নেব,
বলেছিলে ঠিক সয়ে যাবে।
রাই,কেউ কি কখনো পেরেছে?তুমি কি পেরেছো?
আজও এই শহরে আমি একা থাকি,
সবাই আছে !
কিন্তু অন্ধকারে
একা একা জনবহুল শহরে একটা মানুষ খুঁজি ।
অন্ধকার ভেদ করে
নিঃশব্দে একটা ছায়াসঙ্গী ---
এভাবেই যাবে হাজার অমাবস্যা,
প্রতীক্ষা করতে পারি
অনেক বছর ধরে সব
বেদনা কে নিয়ে
নিবিড় উষ্ণতার জন্য ---
যেভাবে বেদনার বিষে নীল বেহুলার শয্যা।
কষ্টের শেষপ্রান্তে দাঁড়িয়ে,
অসহায়ের দিন যাবে দীর্ঘশ্বাসে,
তবু বেঁচে থাকার প্রয়োজনে সান্ত্বনা চাই,
যত দূরেই থাক, পৃথিবী একটাই ।

তুমি চলে যাবে

তুমি চলে যাবে
কিন্তু নিয়ে যেও আমার সকালের অশ্রু
আর রাতের নির্ঘুমতা
তোমাকে ভালোবেসে আনন্দে বেঁচে থাকবো বলে
শুধু সময়ের স্বপ্ন গুলো দেখেছি , তোমাকে পাবো বলে।
কিন্তু তুমি চলে যাবে!
আমার কিছু প্রশ্ন ছিলো
আর তার উত্তর না দিয়ে,
অনেক কথা অসমাপ্ত রেখে
তুমি চলে যাবে।
আমার স্মৃতির ছবি গুলি এখনো তাজা
এখনো ঘুমের মধ্যে অনেক ছবি উঠে আসে
আবেকি ও ভালবাসার হিরন্ময় আলোর ছবিগুলো।

তোমার কণ্ঠস্বর!
আজ কেনো বেসুর গান বাজে।
একটু পরে সব বাতি নিভে যাবে সূর্যাস্তের সাথে
নীল বেদনার জল , অনিকেত প্রান্তর শূন্যতার ছোঁয়া।
দুমড়ানো স্বপ্নের বিসর্জন
বিলুপ্ত হয় নদী খাতে
তুমি চলে যাবে
পাড়ের অপেক্ষায় জাহাজটা ভেঁপু বাজাবে এখুনি
বাতাসে বহে আসা ভালবাসার
উষ্ণ বাণী টুকু একটু পরে হারিয়ে যাবে।
তোমার শেষ চুম্বনের নীরবতার মাঝে আমি চিন্তা করেছি একটা আকাঙ্খা,
তখনো আমার সবকিছু ছাপিয়ে এনেছিলো
অন্দর মহলে হলুদ পাতার ঘ্রাণ।
এখনো তারা আমাকে তোমার বলে ভাবে
এখনো তারা ভাবছে ;আমি কতক্ষন তোমার জন্য অপেক্ষা করবো
তোমার যাওয়ার পথ চেয়ে !
তারা ভাবে আবহমান চুপিসারে।
তুমি চলে যাবে
আজ আমি সব আকাঙ্খা,বেদনা, স্বপ্ন গুলো নিয়ে মিলিত হবো
আমার চার পাশে যে গুলো বোনা আছে
আজ সেই অতলান্ত আকাশের অপার অস্তিত্ব হীনতায় উৎসমুখে আবার ফিরে যাবো।
তুমি চলে যাবে --
জাহাজের ভেঁপু বাঁশিটা
সময়ের কথা বলে
বেজে ওঠে।
তুমি চলে যাবে! তুমি আর আমার মধ্যে নেই

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register