Sun 26 October 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক ধারাবাহিক কথা সাগরে প্রদীপ গুপ্ত (পর্ব - ১১)

maro news
সাপ্তাহিক ধারাবাহিক কথা সাগরে প্রদীপ গুপ্ত (পর্ব - ১১)

সুন্দরী মাকড়সা

খামটাকে হাতে নিয়ে চুপচাপ বসে আছে ঋষি। শীত আর গরম যেন লুকোচুরি খেলছে। কোনোদিন হয়তো অফিসের ফ্যান ছেড়ে বসলে একটু পরেই উঠে এসে ফ্যান বন্ধ করতে হচ্ছে, আবার কোনোদিন ফ্যান না ছেড়ে বসলে বেশ গরম লাগছে। চিঠিটার কোনো বিশেষত্ব নেই। এমনিই সাদা রঙের একটা সাদামাটা লম্বাটে লেফাফা। কিন্তু ওটার ভেতরের কাগজটার এককোণে একটু লালচে ছোপ লাগা। ওই ছোপটা কি রক্তের? নাও হতে পারে। তাহলে কি শব্দগুলোকে প্রাধান্য দেওয়ার জন্যই ওই লাল ছোপটাকে ছোপানো হয়েছে? ঋষি একবার ভাবছে বিষয়টাকে নিয়ে আর এতোটুকুও ভাববে না। আর সত্যিই তো, ভাববেই বা কেন? ও তো সত্যিই আর কোনোকিছু নিয়ে গোয়েন্দাগিরি করতে বসে নি, কিন্তু যতোই ভাবুক ভাবনাটা ফের আবার যেন ওর মনে চেপে বসছে। -- কি হলো? কি এতো ভাবছো ঋষি? স্নেহা এসে ওর টেবিলে হাত রাখলো। -- এনি প্রবলেম? বাড়ি থেকে কি কোনো... -- কই ? কিছু না তো! না না, বাড়ির সবাই ভালোই আছে। --- উঁহু, তোমার মুখটা তাহলে এরকম দেখাচ্ছে কেন? কী হয়েছে ঋষি? আমায় বলো প্লিজ, আমি না তোমার বন্ধু? -- সত্যি বলছি স্নেহা, সেরকমটা কিছুই হয় নি, যেটা তোমাকে শেয়ার করলে আমি হাল্কা হতে পারবো। -- ওকে, তবে আমার কিন্তু... তুমি যখন বলছো কিছু হয়নি, তখন নিশ্চয়ই কিছু হয় নি। স্নেহা চলে গেলে ঋষি উঠে ফ্রেসরুমে গিয়ে চোখেমুখে ঘাড়ে জল দিয়ে রুমাল দিয়ে মুছে ফেললো মুখটা। টেবিলে এসে বসে ল্যাপটপটাকে অন করে অফিসে জয়েন করলো ঋষি। জয়েন করা মাত্রই কাস্টমারেরা এসে যেন ঝাঁপিয়ে পড়লো ওর ওপর। কাজে ডুবে গেলো ঋষি। সারাটাদিন চিঠির কথা মাথাতেই এলো না ঋষির। ল্যাপটপ বন্ধ করে, যাদবপুর যাওয়ার বাস ধরে, সেখান থেকে দুটো অটো পালটে বাড়ি ফিরলো ও। ঘরের তালা খুলতেই দুচোখ ছানাবড়া হয়ে গেলো ওর। কে যেন সারাটা ঘর লণ্ডভণ্ড করে রেখে গেছে। আলমারিটা হাঁ করে খোলা, আলমারির সমস্ত জামাকাপড়, টেবিলের কাগজপত্তর, থালাবাসন হাঁড়িকড়াই মেঝেতে লুটোপুটি খাচ্ছে। অথচ ও নিজের হাতে গোদরেজের আলমারির পাল্লা লক করে গেছে, দরজার নভতালের ছয় লিভারের তালাটাকে তো ও নিজের হাতেই খুললো। তবে? যে যেই উদ্দেশ্য নিয়েই এসব করুক না কেন, সে ঘরেই বা ঢুকলো কীভাবে আর আলমারিই বা খুললো কীকরে? গায়ের থেকে জামাটা খুলে চেয়ারের হাতলে রাখতেই জামাটার বুক পকেট থেকে কী যেন একটা মেঝেতে গড়িয়ে পড়লো। গতকালের সেই দুলটা। সেটাকে যে জামার পকেটে ভরে রেখেছিলো, সেই জামাটা পড়েই ও অফিস চলে গেছিলো। তাহলে কি এই দুলটার খোঁজেই এতোকিছু ওলটপালট করে খোঁজা হয়েছে? আর সেই হুমকি দেওয়া চিঠিটার সাথেও কি এই দুলটার কোনো সম্পর্ক আছে? ঋষির কপালে ফের চিন্তার ভাঁজ পড়লো। চলবে
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register