Sat 25 October 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক ধারাবাহিক কথা সাগরে প্রদীপ গুপ্ত (পর্ব - ২২)

maro news
সাপ্তাহিক ধারাবাহিক কথা সাগরে প্রদীপ গুপ্ত (পর্ব - ২২)

সুন্দরী মাকড়সা

ঘটনার আকস্মিকতায় ওরা দুজনেই চমকে উঠলো। সিঁড়ি দিয়ে নামছে বেড়ালটা। কিছুক্ষণ বাদে নীচ থেকে আওয়াজ এলো --- " ম্যাও " আজ এখানে আসার পর এই প্রথমবার ওরা দুজনেই হা হা করে হেসে উঠলো। -- তাহলে এই ব্যাটা বেড়ালের বাচ্চাই কিছু একটা ফেলেছে মনে হয়। ঋষি হাতের টর্চটাকে জ্বেলে বাথরুমের ভেতর গিয়ে অবাক। যেখানে যেমনটা থাকার কথা ঠিক সেরকমটাই আছে। কলের নীচে বালতিটাও যেভাবে পাতা থাকে সেভাবেই পাতা রয়েছে। তাহলে ওরা যেটা ভেবেছিলো যে বেড়ালটাই হয়তো বাথরুমের ভেতরকার বালতিটালতি কিছু ফেলে দিয়েছে, তাহলে ব্যাপারটা সেরকমটা নয়, বেড়ালটার সাথে শব্দটার কোনো সম্পর্কই নেই! বেশ খানিকটা আশ্চর্যই হলো ঋষি। ততোক্ষণে স্নেহাও বাথরুমের দরজায় এসে দাঁড়িয়েছে। -- " কী বুঝলে? বেড়ালটা নির্দোষ তো? স্নেহা জিজ্ঞাসা করে। স্নেহার এতোক্ষণে কিছুটা নার্ভাস লাগছে। প্রশ্নটা করতে গিয়ে যেন সামান্য কেঁপে গেলো স্নেহার গলাটা। প্রশ্নটার সরাসরি উত্তর না দিয়ে ঋষি তাড়াহুড়ো করে জানালার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। শ্রীমান মার্জার হেলতে দুলতে ভাঙা গেটটা দিয়ে বাইরের রাস্তায় গিয়ে অবিকল একজন মানুষের মতো, রাস্তার দুধার দেখে রাস্তা পার হচ্ছে। হঠাৎ স্নেহার উত্তেজিত ডাকে ঋষি ওর দিকে ফিরে তাকালে দেখতে পেলো, স্নেহা একটা হলুদ হয়ে যাওয়া বিবর্ণ কাগজকে হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এর আগে ঋষি যে পুরোনো কাগজের টুকরোগুলো পেয়েছিলো, স্নেহার হাতে ধরা কাগজটা একদমই সেরকমের তবে এ কাগজটা আগের কাগজগুলোর তুলনায় বেশ খানিকটা বড়। ঋষি দ্রুতপায়ে স্নেহার দিকে এগিয়ে এলো।

রীতিমতো উত্তেজিত হয়ে স্নেহা ঋষির দিকে কাগজটা এগিয়ে ধরলো। এটা বাথরুমের সামনের প্যাসেজে পড়েছিলো ঋষি। তাহলে কী এটাকে ফেলতে এসেই কেউ ওরকম শব্দ করে... ঋষি এগিয়ে এসে স্নেহার হাত থেকে খুব সাবধানে কাগজটাকে নিজের হাতে নিলো। ঋষি খুব মনযোগ দিয়ে লেখার কালিটাকে পরখ করে দেখার জন্য টর্চের আলোটাকে কাগজটার ওপর ফেললো। -- আমার মনে হয় এটা লিখে ফেলতে গিয়েই... ঋষি স্নেহার ঠোঁটে আঙুল ছুঁইয়ে স্নেহাকে থামিয়ে লেখাটা পড়তে শুরু করলো। আগের টুকরোগুলোর মতোই বিস্তারিতভাবে কিছু লেখা নেই কাগজটাতে। ঋষি লেখাটা পড়তে শুরু করলো। --- " চিঠিটা পড়া হয়ে গেলেই ছিঁড়ে ফেলে দিও প্লিজ। সম্ভবত ওর কাছে আমি ধরা পড়ে গেছি। আগামী পরশু যে যাওয়ার কথা ছিলো সেটা আপাতত... " ব্যাস, আর কিছু লেখা নেই। তবে ঋষি একটা বিষয়ে নিশ্চিত হলো যে কালিটা দিয়ে লেখা হয়েছে, সেটা বেশ পুরোনো। এছাড়াও কাগজটার এক কোণে সামান্য একটু ভেজা মাটি লেগে আছে। স্নেহার দিকে মুখ তুলে তাকালো ঋষি। ঋষির এ দৃষ্টি স্নেহা কখনো ইতিপূর্বে দেখেনি। ঋষির দৃষ্টি যেন ঠিক এখানে নেই। দুটো ভাঁজ খাওয়া ভ্রুর মধ্যে ওর চোখদুটো যেন জ্বলজ্বল করে জ্বলছে।

ক্রমশ...

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register