Thu 30 October 2025
Cluster Coding Blog

কবিতায় স্বর্ণযুগে শ্রী সদ্যোজাত (গুচ্ছ কবিতা)

maro news
কবিতায় স্বর্ণযুগে শ্রী সদ্যোজাত (গুচ্ছ কবিতা)

১| অসমাপিকা

তোমাকে সৌখিনতা করে আদর করতে পারিনা, না পারি তোমার হিসেবি শরীরে বেহিসেবি উপদ্রব করতে, বারবার প্রায়শ্চিত্ত করতে জানি নিজেকে ভাঙার, বারবার তোমার প্রেমে পরাজিত হতে রাজি, রাজি হারিয়ে যেতেও ভিন্ন মুখের যে কোনো চৌরাস্তার, তোমাকে একশ ভাগে ভেঙে হাজার ভাগে গড়ার, তোমার উপর আমার অধিকার কম জমিদারি বেশি তোমার সাজহীন কলতানের কনকচাঁপাটা কবে বুঝবে ? দুজনের নিমিত্ত ব্যবধানটুকু'ই রোজ দুজনের অস্তিত্ব রোজ দুজনের ইতিবৃত্ত একটি ছোট্ট সরলরেখার রোজ সংক্ষেপ। একটানা যুদ্ধের পর একটা রোজ বিকেলের বিরতি, ওটাই তো তোমার মৌন সুখের ক্লান্তি বা রোদেলা অববাহিকা, আমাকে কখনো করে তোলে হঠাৎ ফেরারি কখনওবা হঠাৎ সওয়ারী.. শরতের আকাশ বৃষ্টি হয়ে ঝরছে... মুহূর্তের দু একটি ভালোলাগা কখন যে হৃদকমলের নিঃস্বতা হয়ে ওঠে.... কেউ কি জানে সেদিনের রক্তশূন্য শহরটা চুপিচুপি পায়ে মন্দ সুখের প্রাচীর ভেঙেছে.... আমারই আনমনেতে... আমারই সবখানেতে... রোজের ব্যবধান গড়ি রোজের ব্যবধানটুকু হারাতে

২| প্রশ্ন ছাড়াই_____তুমি কেমন আছ....

তোমার সাথে দেখা হয়তো আর হবেনা ! জীবনের দোহাই টেনে নিরলস নৌকাডুবি.. রক্ত মাংসের এই অনুভবি ঝড় একদিন শান্ত হবে, লুকিয়ে থাকা সুপ্ত হাসি কান্না তোমায় সেদিন খুঁজে নেবে... সাধ্যটুকুতে ছোট্ট গিঁট পরিয়ে বড় সাধ, তোমার মৃন্ময়ী নিঃস্বতার কোলাহলটা মাখার ফুটফুটে যন্ত্রনাগুলোরও একটা নিবিড় আনন্দ থাকে, অন্দরমহলের বাইরে বিকেলটা যখন স্তিমিত হয়ে আসে তখন দেখি বেড়াজাল টপকে দলছুট প্রেমগুলো তাদেরকে সুখময় করে তুলছে নিয়মিত.. কিছুদিনের এই সংলাপ রোজের এই বিভাজন চিরদিনের ব্যঞ্জনা কেন হয়ে ওঠে! অতিক্রান্ত সময় যত জট খুলছে, দেহের মধ্যে রোজই দুটো একটা নতুন চারা জন্ম নিচ্ছে, সম্পর্ক চুকোচ্ছে সম্পর্কের মূল্য ঘড়ি, কিছু চুলচেরা বিশ্লেষণ হৃদয়কে যদি মূল্যহীন করে দেয়...সেও যে এক গভীর অভিসম্পাত, না শ্রাবণ না বসন্ত তুমি বৈশাখী হয়েই থেকো আমি যে তোমার বৈভব হারানো দূর্লভ হেমন্ত বিকাশ, ফিরে নাই আসতে পারো... ফিরে দেখার মাঝে, যেতে যেতেই তো দেখা ,আসা যাওয়ার প্রতিধ্বনি মাঝে, এতো চিন্তা করোনা......অবসর কাটাতে হবে, কেউ কিছুই বলেনা........কেউ কিছুই বলেনি..

৩| তোমার সাথে অনেকটা.....

কিছু করলেই কিছু পেতে হয় বুঝি ? এমন বিধর্মী নদীও তো আছে আমাদের জানা অজানার বাইরে। সাবলীল স্রোত না থেকেও সে পশ্চিমের আকাশটাতে গোধূলির সূর্যোদয় ঘটায়, এই তুমি এই আমি আর এই ক্লাসিক্যাল পাশাখেলা, পাশাপাশি সমান্তরালে দলবেঁধে ওরাও আজকাল মুচকি হাসে, রাত ফাঁকিতে গেলে সকালের প্রথম টগরগুলো তোমার গাঢ় আঠালো বুকটাতে কাঁচামিঠে ভিড় জমাত কি করে..? বড়ো বাড়ির সিংহদরজায় তালা লাগানো অনেকদিন।। বেখেয়ালি চিচিংফাঁকের হৃদয়টা কবে দরাজ হবে..?? বছরভর জমে থাকা কলঙ্কিত প্রেম সেই অপেক্ষায় ।।। সোজা শব্দেই তো রোজদিন পড়ন্ত রোদবৃষ্টির আধভেজা জলছবি এঁকে চলা, পোড়া ঠোঁট বোঝাই একটাই জ্বলন্ত সিগারেট, বারবেলার কাপড়ে চোপড়ে মৌসুমীটা কে সবুজে সবুজ খোলা খোলা ক্যাকটাস করে তুলতে চায়।। তাই তো বলি রম্ভা ভারে যেমন খুশি দ্রৌপদী হও।। অদূরে কালো দিঘিজলটা জুড়ে চিন্তাশীল শকুন্তলা হয়োনা।। তা না হলে ঊর্বশী নামের লম্বা ফলন্ত খালটা শুকোতে শুকোতে একসময় অকাজের লক্ষ্মী পাঁচালির আকার ধারণ করবে.. মনে রেখো রাতবিরেত গরল যত মজবে... গড়নের বারবেলা শাঁস ততই মোটা হবে.. তুমি হয়তো জানোনা.... প্রেম প্রীতি থেকে মরণের ভূতুড়ে টান সবই গোলকধাঁধার কারসাজি,, মর্যাদার আসনে আজও পাথরই দামি, ঈশ্বর তো তেলে জলে চুনে রোম্যান্টিক আসামি..

৪| অদ্বিতীয়া

বৃষ্টি ভেজা অসময়ের শিউলি আর অকালের সিঁদুরমেঘ অপরাজিতায় বরণ করেছি বেলাশেষের বাসন্তী কে- সবকিছু সয়ে নেব এই মধুমাস ক্ষরণে ক্ষরণে তোমার মধ্যবেলার বর্ণহীন তুমিকে ভালবেসে হয়তো লোকচক্ষু সাজানো একটা মধ্যবিত্ত আশ্রয় আছে, কিন্তু সরল অধিকারের বৃত্তটা বড়ই অস্থায়ী গোছের সেখানে, হয়তো চার দেওয়াল জোড়া গোটা কতক প্লাস্টার প্যারিসের ঘর আছে, কিন্তু রঙ মাখতে মাখতে সংসারী মনটা- ঘোর অসংসারী হয়ে উঠেছে, যেখানে পোশাকহীন শরীর- সাথে খোলা খোলা অন্তরের থাকার কথা; সেখানে অনিচ্ছার কর্তব্যগুলো অক্লেশে ধুঁকতে ধুঁকতে মুকাভিনয় করে চলেছে.!! ভাঙা রথের মেলাতে কজনই বা রথের রশ্মিটুকু টানার জন্যে আসে.?? অভিধান সর্বস্ব ভালবাসাগুলো বুঝলই না- অনিঃশেষ হৃদয়টুকুর মানে.!! সেই অতলান্তের কোনো অসীম তৃষ্ণার পরস্ত্রীকে উদয় অস্ত ভালবাসাটা যদি শাস্তিযোগ্য অপরাধ হয়ে থাকে- সেই ভীষণ অপরাধের প্রচণ্ড অপরাধী হতেও ভয়হীন আকাশ দ্বিধাহীন শর্তহীন মাত্রাহীন। সেই আকাশই তো বলেছে... সীমারেখা টপকানো ভাষাহীন বাঁধনহারা মুগ্ধতাই সদর্পে কম্পিত হোক সেই চির সবুজে সবুজ গোপন বসুন্ধরা মাঝে; আরও বেশি মুক্তকণ্ঠে হতে চাই- আমি সেই পরাজিত উদ্বাস্তু বলিষ্ঠ প্রেমিক পুরুষ; আমি সেই দলছুট একাকী দুঃসহ পথিক পুরুষ; আমি সেই চির অস্তগামী নষ্ট সূর্য সকাল পুরুষ; আমি সেই আবহমান মহীয়সী মাতৃগর্ভের যুগযুগান্তরের- এক অতিশয় অভিশপ্ত অসহনীয় সেই মারাত্মকের পুরুষ। নিজের দুঃসাহসিক রোমান্টিক মনটাকে- যদি নিজেরই দুটি হাতে গলা টিপে সমূলে হত্যা করতে পারতাম; এই নির্দয়া নিথর পৃথিবীর কাল শ্রেষ্ঠ নৃশংস পুরুষ আমিই হতে পারতাম। তোমাকে পাইনা- তাই তো আকাশ বেনিয়মের কবিতা লেখে; তোমাকে পাইনা- তাই তো আমি ভীষণ শব্দের খোঁজে থাকি.. জানো " অদ্বিতীয়া " ____ কবিতারা নদীর মতনই জোয়ারভাটায় খেলে চলে কখনো ধীর পায়ে হেঁটেচলে বেড়ায়; যে থামার সে ঠিকই থামবে কখনও পাড়ে নেমে পলিটুকু ছুঁয়ে কখনও-বা নদীপথের এ-দিক ও-দিকের স্বল্প গভীর নাব্যতা হয়ে; স্রোতবহা নদীটা হয়তো অধিক তোমারই মতন- অবিচল স্রোতের উঁচুনিচু জল তোমার ভাঙনের শরীর জুড়ে এঁকেবেঁকে বইতে থাকে; যে গোলাপ কাঁটার প্রেম বোঝে না, ঘামে রক্তের পার্থক্য বোঝেনা; শরীর বেয়ে হাতের স্পর্শ রকম সইতে পারেনা; সে ভূমিষ্ঠ পলির গন্ধ পাবে কি করে.!! তুমি আমার যেমন খুবই কাছের, তেমনি বড় মাঠের ওপারে থাকা দূর্বাদলের মতন; না দেখাতেও দশ চোখ সওয়া, শিউলি পলাশে বন্দিত অদেখার তুমিটা আজও সেই গায়ে কাঁটা দেওয়া প্রথম তুমিটার মতন ; যে অন্তর দিয়ে কেবল অন্তরটুকু চায়, না মরেও প্রতি মুহূর্ত চিতার আগুনে ভস্ম হতে থাকা; জীবনের মূল্য যেমন ভালবেসে তুমি চুকচ্ছো, আমিও দাবিহীন হৃদয় দিয়ে হৃদয়টুকু ভরিয়ে চলেছি; ভালবেসে কতকিছুই না হয়- তবু ভালবেসে ভালবাসার মানুষ মেলেনা। ভালোবাসা যত গভীর সে তত বেশী দিশাহীন; না ছোঁয়ার বৃত্তগুলো আলোকবর্ষ গতিতে একে অপরের কাছেকাছি আস্তে না আস্তেই আরো বেশী গতিতে তারা হারিয়ে যেতে চাইছে ; না ছোঁয়ায় ছুঁতে ছুঁতে তোমার একলা আকাশ আরো বেশী একলা হয়ে পড়ছে অদ্বিতীয়া !! . . বিভ্রান্তিকর দুটি প্রশ্ন আজ তোমায় করব মিতা- কতখানি ভালবাসলে তুমি দিতে পারবে একটা নিশ্চিন্তের নিঃশব্দ হিম শীতল করা সমাধি ?? কতখানি শব্দের ধসে, আমারই সমাধিতে থাকবে তোমার অতল উজাড় উষ্ণ উপস্থিতি ?? সেই জন্যই তো কেউ ভালোবেসে সর্বনাশা উন্মাদ হয় !! কেউবা হয়তো ভালোবেসে এক ব্যতিক্রমী অলিখিত সমুদ্রঝড় হতে চায় !! চলো না গদে বাঁধা এই আমি আর তুমিটা- নেই বিকল্পের অশরীরী হয়ে উঠি; মনের বাঁধা এখানেও নেই, মনের বাঁধা সেখানেও কিন্তু নেই !! অনেক অনেক অনেক খানি ভেবে দেখেছি , দুই পারের- দুই করুণতার মৃত্যুই এনে দিতে পারে এই সর্বগ্রাসী ভালোবাসা থেকে এক অনাস্বাদিত চির মুক্তি !! . . আমার প্রিয় মিতা ____ আমার অব্যক্ত প্রেমের সত্যসন্ধানী, উপন্যাসে হয়তো এটাই তোমার প্রতি সর্বশেষ প্রতিশ্রুতি আমার !! . . আমার তোমার কাহিনীটা নেই আশ্রয়ের আকাশটাতে সারাটা দিন এদিক ওদিক ভেসে বেরোনোর মতন ; ঠিক নীড় হারা দুটি পাখির মতন দেহের থেকে বড় দুটো দুটো চারটে ডানা দিয়ে অস্তিত্ব বাঁচানোর সংগ্রাম করে চলে !! এক বিন্দুও কেউ বসতে পারি না নিঃসঙ্কোচ শরীর দুটোর গা ঠেকানোর জায়গা জোটে না; তবু রিফিউজিরা একটা সন্দিহান মাটি পায় দুই সীমারেখার মাঝে টিকে থাকার লড়াইটা সেখানেও কিন্তু আছে। আমরা ও তো পাই এত্তো বড় মহাকাশের এত্তো বড় শূন্যতা-যা গোগ্রাসে গিলেই চলেছি; মন্দবাসার ঘরগুলোতে রোজের পৃথিবীটা রাত পোহালেই প্রথম সূর্যোদয়টা দেখে সব্বার আগে- জরাজীর্ণ গোধূলি মাখা দুটো বড় বড় চোখে; আক্ষেপের বিষয়টা আজও ভ্রুক্ষেপহীন হয়েই রয়ে গেলো একটা আসল জ্যোতির সূর্যোদয়টাই যা হলো না। . . তুমি আছো বলেই কল্পনারা ঠিক তোমার মতন মাটিতে নূপুরধ্বনি তোলে; তুমি আছো বলেই ছন্নছাড়া হৃদয় বাউলের একতারা সুরে নতুন স্বরলিপি লেখে; তুমি আছো বলেই মাঝ আকাশটা প্রখর উত্তাপ দিয়ে জোছনার গর্ভ এঁকে চলে; তুমি আছো বলেই অপরাহ্ণ ফুলগুলো প্রথম কাঁচা রোদে মাখামাখি করে; তুমি আছো বলেই ছিঁড়ে যাওয়া সন্ধ্যেগুলো পূর্ণিমা রাতে যেমন খুশি এপাশ ওপাশ করে; তুমি আছো বলেই এক অন্য গন্ধের সূর্য সকাল আছে। এক ব্যতিক্রমী উপচে পড়া এপার ওপার রাতের উষ্ণ স্পর্শ আছে !! চাইনা তোমার নিষ্কলুষ ভোরের ওই প্রথম ফোটা ফুল; মৌনতার কালো মেঘেই ঢেকে থাকুক- সেই জোড়া ঠোঁট, জোড়া চোখের কোণ; আমি হতে চাই আরও নিঃস্ব আরও অনেক খানি ব্যর্থ। . . অন্ধকারের প্রেমগুলো তে সূর্যের আলো পড়ে না কখনওই; রাতবেরাত ভালবাসার চাঁদ ফুটে থাকে সেখানে; প্রিয় " অদ্বিতীয়া "____ তোমায় উত্‍সর্গ করা কবিতা দিয়ে আজ তোমার সাথে কালো কালিতে কথা বলা; কেমন আছো জিজ্ঞেস করবো না আজও; তোমার আমার সম্পর্কটা প্রশ্নসূচকের অধীনস্থ নয় যে; আশা করি উপায়হীন আমারই মতন, তুমিও বিষয় বিমুখ রকমফের ভালোই আছো ?? এটা তোমার কাছে বোধহয় আমার দ্বিতীয় চিঠি !! আমি জানি সাজানো বর্ণমালা পড়তে তুমি একবিন্দুও পছন্দ করোনা; "আকাশের স্বপ্নসাগর কবিতা" - তোমার কাছে ইহকাল পরকালের মতন; তোমার শোবার ঘরে দক্ষিণ জানালার ওপরের কার্নিশ চুঁইয়ে আমার কবিতারা তোমায় আজকেও ছোঁয়ায় দোলায় চুম্বনে চুম্বনে ভরিয়ে তুলবে; তথৈবচর অবস্থাটা দুই মেরুতেই; তবুও ওই ভাঙাচোরা কার্নিশটাই তোমাকে যতটা পারবে একান্তের নিরালাটুকু দিয়েই যাবে; তোমার সব রুচিতেই তো আমারই বাস অদ্বিতীয়া !! কি জানো অপ্রাপ্তির- "ভালো থাকা ভালো রাখারা" এখন এদিক ওদিকে ভ্রাম্যমাণ !! ওদের চওড়া কাঁধে যতই ভার আসুক, ওরা সয়ে নেবে সবটুকু; মুখোশ পরতে জানেনা, কেনই বা পরবে !! তুমি যখন হাড় ভাঙা রাতের আলো নেভাতে শশব্যস্ত- "তোমার আকাশ" তখন অজ্ঞাত কোনো এক দায়হীন রাজপথের নিয়ন আলো হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে !! সেখানে তোমার নিষ্পলক বিষণ্ণ মুখি তুমিটা- আজও আমার সোনা সুখের সরল গর্বিত অহংকার !! সহায়সম্বলহীন প্রান্তরেখা গুলি তোমার মরু উদ্যানে দলছুট বৃষ্টিপ্রেমী আকাশের অন্বেষণে প্রতি মুহূর্তের সংঘাতগুলোকে আজকাল, বেশী করে আগলে রাখতে শিখে গেছি !! তোমার আমার মাঝের মেঘনা নদীটাও পারেনি তোমার মৌলিক চরিত্রগুলিকে- রোদে জলে ঝড়ে এতটুকু আছন্ন করে রাখতে বা ধরো স্রোতের অভিমুখে একপেশে টেনে রাখতে। অসম্ভব ধারাপাতটা দুজনের মাঝে বড্ড বেশিরকম অচল ; তবে জানো ভালোবাসা এক্কেবারে নিখুঁত না হওয়াই ভালো; যেমন কলঙ্ক ছাড়া চকচকে চাঁদের প্রেম বড়ই দুর্বিসহ অসহ্যের করুণ কালো !! . . আমার হৃদয় গভীর সর্বজয়ী নীলিমাটা যে তুমি; আমার আশা নিরাশার প্রাচীর ভাঙা অগ্নিবীণার পূর্বাশা যে তুমি; আমার জন্মজন্মান্তর আকুলতার সর্বশেষ ভূমিকাটা যে তুমি; আমার জীবন থেকে জীবনী হয়ে ওঠা, আমার ভালোবাসা, আমার সে অদ্বিতীয়া !! কখনো এগালে কখনো ওগালে , কখনওবা তোমার কম্পিত ঠোঁটের উষ্ণ মাদকতায় ; কখনওবা আঁচলের কুয়াশা ভেঙে তোমার স্তনে অস্তনে উন্মগ্ন বেপরোয়ায়; তোমার একলা আকাশের অকুতোভয় লুটিয়ে পড়া- তুমি বুঝতে পারো অদ্বিতীয়া ?? অনুভবের সব তার ছিন্ন করে তোমার আরও নিগূঢ় হওয়ার কত কোটি সহস্র বাসনা আমার !! অসহ্য যন্ত্রণার ভীষণ জ্বালামুখটা এ দগদগে দেহ মনেরও সীমানা ছাড়িয়েছে; তোমায় অনেকখানি বেশী ছুঁতে চাই আমি; আরও বেশী উত্তাপের প্রখর রাত নিয়ে কবে আসবে তুমি আমার একলা রাতে নেই শেষের উথালপাতাল সাগর জোয়ার হয়ে ?? ভালোবাসি তোমায় অসম্ভবের সবটুকু ছাপিয়ে, তোমার অন্তঃসলিল হয়ে; ভালোবাসি তোমায় সেই উন্মুক্ত খোলা সাহারায়- প্রতি রক্তকোষের আসমুদ্র হিমবাহটা জুড়ে। জানো " অদ্বিতীয়া " ____ জীবন টা শুরু হয় একভাবে চেনা বাঁধা মাটির ছাঁচে; যেমনটা হয় আর কি নিয়মের বেনিয়ম শিকড় উপরে ফেলে; বয়স যত বাড়ে জীবনের মানেটাও পাল্টাতে থাকে; সেই চেনা ছকটা ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায় যত জটিল ভাবনার মায়াপাশে; অবশিষ্ট পড়ে আছে যারা- তারাও যে সংগোপনে তোমার প্রতিনিধি হয়ে আমার উঠোনে রংচঙের মরুভূমি এঁকে চলে; হাতের বাইরে সবটাই চলে গেছে; ফেলা আসা সন্ধিক্ষণটা আজ দর্শকের আসনে- যন্ত্রণার দশ অবতার খুঁজে ফেরে; বয়সের মাপকাঠি তে শুধু শরীরটুকুই ধরা পড়ে; চিলেকোঠায় রাখা আসল মানুষটা আজও আটকে বৈশাখের প্রথম মুকুলে। টুকটুকে লাল সিঁথি শুভদৃষ্টি গলা ভরা মোটা রজনীগন্ধার মালা; ব্যস- এতটুকুতেই স্বামী নামের স্বীকৃতিটুকুই যথেষ্ট ; কিন্তু অন্তরের আঢাকা স্তনবৃন্ত পর্যন্ত পৌঁছানো একপ্রকার অসাধ্য সাধনার বিষয়; প্রায় সব মেয়েদের একটা গোপন ঘর থাকে, সেখানেও তারা সিঁদুর পরতেই ভালবাসে; যাকে তারা হৃদয় দিয়ে বুকে আগলে রাখে, কেবল তারই নামে; প্রতি রাতের বাসর শয্যা তারা নিজের হাতেই গুছিয়ে রাখে ওই লুকোনো প্রাসাদে; শুধু মনে নয়, মেয়েদের শরীরেও ভালবাসার অসীম পাতাল আছে; পোড়া জিভ নিয়ে কেবল মেয়েরাই হাসতে পারে; সংসারী অনিচ্ছেগুলোকে নিঃশব্দে ওরাই সংহার করতে পারে; মেয়েলি কষ্ট গুলো ছেলেদের মতন নয় যে, পুরুষের অধিক টানাপোড়েনের প্রেম ওরাই দিতে জানে; অপ্রকাশ্যে থাকুক এইসব আসল নকল ভেদাভেদের দোটানা; ধোপদুরস্তের যান্ত্রিক সমাজ এখনো এসব নষ্টামো সরাসরি পছন্দ করে না; তুমি বলতে আঘাতে আঘাতে যে প্রেম ক্ষয়হীন- সেই প্রেমের মা বাবা বয়স কোনো কিছুই থাকতে নেই; সেখানে ইচ্ছেরা ইচ্ছেমতন- প্রান্তিকের কোনো রেখা টানা নেই ; . . আমার " অদ্বিতীয়া " কোনো ব্যতিক্রমী মহিলা চরিত্র নয়; না তার একলা আকাশ কোনো ভিন গ্রহে সতী লক্ষ্মীর সাথে ঘরবাঁধা ভীড়ু পুরুষ; হৃদয় দিয়ে যা পেলে তা হৃদয় মাঝে রেখো মিতা; হৃদয় তোমার হরণ হয়নি, ধরো হয়েছে বরণ; স্থানকাল ভেদের বহু চর্চিত গল্পটা এখন সময়ের বিমুখে- বড়ই একঘেয়ে সেকেলে; ফেরারি জোছনার পূর্ণিমাটা কার ?? গোত্রহীন শেষ রাতের বাসর ঘরটাই বা কার ?? দখল হয়ে যাওয়া গোল চাঁদটার পেছনে ঘুটঘুটে অন্ধকার; সূর্যের আলো সেখানেও যে নিষ্প্রভ ; অনিচ্ছায় প্রতিদিনের এই সাপলুড খেলা; নেই নেই কোত্থাও নেই সাঁকো ধরে হারিয়ে যাওয়ার !! তোমার মাঝেই তুমি থেকো ভেতর মুক্ত আটপৌরে হয়ে; তোমার অলিখিত সত্ত্বার তুমিকে এভাবেই রেখো আটকে মন্দ সুখের চার দেওয়ালে; সব্বাই বলে সোনার জলে রূপোর গয়না যেন সোনার গয়না; অগত্যা খাদ ছাড়া খাঁটি সোনা রোজের জ্যান্ত দেহ পায়না !! বেঁচে থাকার অলিগলিরা কোনোদিনই রাজপথ হতে পারবে না; শহর লাগোয়া একটা গ্রাম সড়ক মুখি হতে পারলো না; সে কিনা সৌভাগ্যের রাজপাট বানানোর অলিক দিশা গড়তে ব্যস্ত !! শুধুমাত্র বেঁচে থাকার জন্যে টিকে থাকাটা, বেশ শোচনীয়; কষ্ট কিসের প্রিয় ?? সুখও তো আসে দুঃখের মত করে এ নদী সে নদী ঘুরে; খারাপ লাগা ভালো লাগা, পাপপুণ্য লাভলোকসান, এসব শুধুই সাধারণ মানব দর্পণের বিষয়; দামাদামি তে যা সহজ মূল্যে সহজ লভ্য; এসব থেকে বহু যোজন দূরে তোমার আমার খাম বন্দি গল্পের ইতিবৃত্তটা- ভাবনার অন্তহীন একাল সেকাল জুড়ে; তুমি আমার আমি তোমার গল্পটা কেবলই মায়ার রক্ত ছেটানো মরীচিকা; ছন্দে ছন্দে মুখরিত অপরিসীম ছন্দপতন; কৌলিন্যের মাখ মাখ ব্যাপারটা পুরোটাই দরদি কথাশিল্প; সেখানে কল্পনার আশ্চর্যরকম আকাশটা- সজ্ঞানে অজ্ঞান হয়ে শুধু বাড়তেই থাকে অহরহ; সেই সাথে চলে আকাশ ছেয়ে আকাশ ভাঙার খেলা যথাযথ। . . এ রাস্তা সে রাস্তা ও রাস্তা... রাস্তা অনেক অনেক অনেক... তাও তুমি বলো রাস্তা নেই রাস্তা কম... কেন বলো এরকম কথা... যাও যাও পারলে একবার ঘুরে এসো সেখান থেকে ওখানে... রাস্তায় নামো...প্রিয় রাস্তায় বাঁধো ঘর; শব্দের অহংকার করা সেখানে সর্বৈব বৃথা; মাটি ছোঁয়া শিশিরের স্বাদটাই যে আলাদা; শিশির ছোঁয়া প্রতিশ্রুতিরা ঘরে ঢোকার ছাড়পত্র আজও পেলো না; কেউ সঙ সেজে শাকাহারী সংসারি, কেউ রং মেখে আমিষভোজী বৈরাগী; কেউ হেমলক ঢেলে রশদের আকাশ গড়ে, কেউ উল্লসিত কেউবা উল্লসিতা বুকে বেঁচে থাকার অছিলা খোঁজে; চলো চলো এভাবেই ভালবাসার সাগর নদী খেলায় মাতোয়ারা হয়ে উঠি; যে পৃথিবীটা স্বয়ং ঈশ্বরও চেনেন না, চলো জীবন গড়ি সেই নিরুদ্দেশের পথে; নদী লাল রঙেরও হয় শুনেছ কখনো ?? বোকা প্রশ্নে ধকলের এ শরীর লজ্জিতও হতে পারে !! যার শূন্যতা আকাশের প্রতি কোণের ছায়া শরীর হয়ে বেঁচে আছে, সময় পেলে ভর সন্ধের কিছু পরে তার কুঁড়েঘরটা পারলে একটিবার দেখে এসো; শোনা যায় ওখানে প্রথম রাত থেকে প্রথম ভোর পর্যন্ত সব মোহনার মুখগুলি যেন লাল মাটির আবির মাখানো !! যাবো যাবো করে তোমার সেখানে যাওয়া হবেনা, সেও যে অজানা নয়; তোমার শুষ্ক রঙের সিঁথিটা সেই নদীমুখের ছত্রছায়াটা পেলো না !! যন্ত্রণা বলতে এইটুকুই; এই উদয় অস্ত রোমাঞ্চিতের রাস্তায় তোমার আমার মরণ সুখের দিনদুপুর গুলো এখন বেশ আকাশ থেকে পাতাল পর্যন্ত নির্ভরতাটা অপ্রশমিত কষ্টের সিঁড়ি ভাঙার মতন; নেই অন্তমিল অবশতায় শেষ ; তুমি তো আছো কলমের দুঃসহ কালিতে কখনো আছো অস্তমিত আকাশের লালে; ভাবনার প্রতিচ্ছবি হয়েই আছো- কখনো অচিনের কাশফুলে কখনো অলীক বসন্তের উঠোন জুড়ে ; প্রতি মুহূর্তেই তো দেখা হয় তাদের অনেক অদেখার তিন প্রহরের প্রদীপ হাতে; আমার নারায়ণ মন রাখতে জানে না গো, না তোমার লক্ষ্মীটাও অলক্ষ্মীর শাড়ি ছুঁয়েও দেখেনি কোনোদিন; তাঁরা সমর্পণে অর্পণে সমর্পিতই হতে জানে; নিশ্চুপের শামিয়ানা বিছানো এক ফালি চাঁদের দেশে , সকাল রাত্রি জুড়ে একটাই দীর্ঘ রাস্তা; অবশেষের গন্তব্যটা অজানা !! একটা আমি একটা তুমি , সাথে একটাই স্বপ্ন সত্যি করা হাসনুহানা; পৃথিবীর মধ্যে আর এক বিষ্ময়ের নীল নীল আকাশে , ছড়িয়েছিটিয়ে থাকা ভালবাসি ভালোবেসো তারারা; এখানে নিশুতি রবির নীরবকাশ বৃষ্টি ঝরে, এক অন্য শ্রাবণের আঁচলে আঁচল ফেলে !! নিজেকে কতো গুটিয়ে লুকিয়ে রাখবে ?? ঘরেবাইরে যুদ্ধটা থামার নয় কোনোদিনও; রাত বন্দি ময়ূরপঙ্খিরা কেবল দিশেহারা; নিষ্ঠুর সময় চলেছে ভাষাহীন জোয়ার গুলো একে একে ভেঙে; সকল বাঁধন অক্লেশে ছিঁড়ে ফেলে, প্রিয় মিতা তুমি থেকো সেই উদাসী খরস্রোতা হয়ে,অবসাদের মাঝ আকাশটা আগলে; মন্দ মধুর স্নিগ্ধ বাতাসও যদি কখনো এসে ছুঁতে চায় তোমায়, দিক না একটু ছুঁয়ে; হবে না হয় একটু বেশিই মন্দ তুমি গোপনে; লুকোনো সবটুকু উজাড় করে, ক্ষতির ক্ষতি কিইবা হবে বিশেষ তাতে ?? ফাটল ধরা দেওয়াল সর্বস্ব শরীর গুলো, ভালবাসার মাংসহীন পাঁজর খুঁড়ে খুঁড়ে বাস করে; হাটে বাজারে হেঁটে চলে বেড়ানো শব্দগুলো তোমার আমার মাঝে ভারহীন স্থানহীন.. সব কিছুর সংজ্ঞা হয় না, ধরো হতে নেই ; কিছু অব্যক্ত অনুভূতি না পাওয়ার হাত ধরেই জীবন কাটিয়ে দিক.. নিয়তি হয়তো চায় এরকমই কোন এক অসম্পূর্ণ মিলন শ্বাশতের.. বিশেষ দ্রষ্টব্য__ প্রিয় অদ্বিতীয়া.?? খামে ভরে আজ তোমায় যা পাঠালাম, তা তোমারই গর্ভজাত ছোট্ট আকাশ প্রদীপ, অস্তিত্বের শেষ পতাকাটুকু স্ব ইচ্ছায় ওই তো বহন করতে চাইছে..!! আজ তোমার ছোট্ট নীল কে তাই তোমার কাছে পাঠিয়ে দিলাম চিঠি করে বর্ণমালায় হরেক শব্দের জীবন্ত মায়ামুখ এঁকে, আমি জানি অদ্বিতীয়া এসেছিল ঈশ্বরের কোনো এক ঐতিহাসিক ভুল সিদ্ধান্তে..!!! শুধুমাত্র এই কারণটুকু বুকে মেখে শত অনিচ্ছাসত্ত্বেও দুবেলা আহ্নিক করি তাঁর; প্রিয় মিতা.?? চিঠিটা পড়ার পর খামে ভরতে ভুলো না কিন্তু, সাদা শিউলির স্পর্শ গন্ধ আছে সেখানে; তোমার চোখের আগুন নরম শিখা হয়ে অগ্নিজ্বালায় জ্বলতে থাকুক আমার তুমিময় অন্তরে; তুমি তো জানোই অধরার নক্ষত্রদের ভীড়, কেবল আকাশেই হয়, মাটি তো সবের ধারক আকাশের তো নয়, একটা বসন্ত না হয় অপ্রকাশ্যেই ফুটে থাকুক; সূর্য কি অস্ত যায়..?? সে অস্ত মুখি যে নয়..!! একই সূর্য সূর্যাস্তেও ফুটে থাকে, এপারে না হয়_______ধরা দিক ওপারেই, ওপারেই ফুটুক ওপারেই জ্বলুক..!! দুচোখে এতো রঙের নদী পথ রচনা, তবু গা লাগোয়া দীঘি জলে সমুদ্র স্নানটাই যা হলো না অদ্বিতীয়া..!! ভালবাসা দেখতে কেমন মিতা.?? ঠিক ওই সহজীয়া কালরাত্রি চাঁদের মতন, অসমাপিত নেই ঘুমের গোলকধাঁধার মতন কলঙ্ক সেখানেও কলঙ্ক যে এখানেও ; ধরো তৃতীয় চিঠি লেখার অবকাশ যদি আর না পাই, যদি আগামীটা হঠাত্‍ই কলম আর কালির সন্ধিক্ষণ মুখো হতে না চায়..?? আকাশের অসমাপ্ত চিঠিরা সত্যিই ভালো নেই মিতা..!! ভালো থেকো নামহীন ভালো থাকাটুকু নিয়ে____ ভালো রেখো পশ্চিমের সদরদরজা খোলা তেপান্তর পেরনো আকাশটাকে..!! ___ইতি___ তোমার বিনিদ্র আকাশ
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register