Wed 29 October 2025
Cluster Coding Blog

গল্পেরা জোনাকি তে রীতা চক্রবর্তী (পর্ব - ৯)

maro news
গল্পেরা জোনাকি তে রীতা চক্রবর্তী (পর্ব - ৯)

নীল সবুজের লুকোচুরি

...তাই আমি ঠিক করে রেখেছিলাম যে তোর সাথে যেদিন দেখা হবে সেদিনই আমি সবকথা খুলে বলবো তোকে। তোর আমার মধ্যে কোনো লুকোচুরি থাকাটা উচিত নয়। আর হ্যাঁ, আমাদের দুবছরের একটা ছেলে আছে।"

সুমিতার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ল। হঠাৎ করে কে যেন ওর গলা টিপে ধরেছে। বড্ড কষ্ট হচ্ছে। ওর মুখে যে হাজার ওয়াটের লাইট এতক্ষণ জ্বলছিল সেটা যেন এক মুহূর্তেই ফিউজ হয়ে কালো অন্ধকার হয়ে গেল। নিজেকে সামলে নিয়ে জিজ্ঞেস করল," বিয়ে করেছিস?" ---হ্যাঁ, সেটা বলতে পারিস, কাগজে কলমে হয়েছে। ---তোর বাড়িতে সবাই জানে? ----হ্যাঁ, বাবা মা কে জানিয়েছি। ---ছেলের কি নাম রেখেছিস? ----" অরমান।" ---" আর কিছু বলবি কি? নয়তো এবার চল। বাড়ি ফিরতে হবে।" ---"তুই কি রাগ করলি?" ----"তোর কি তাই মনে হচ্ছে?" ----" আমার মনে হচ্ছে তুই হয়তো কিছু বলতে চাইছিস, কিন্তু বলছিস না। তোর কি আমাকে বলার মতো কোনো কথা নেই? আমি কি তোর মনের কোনো কোনায় এতটুকুও নেই? এত বছরে একবারও যোগাযোগ করলিনা, কখনো কি তোর জানতে ইচ্ছে করেনি আমি কেমন আছি? কি করছি? কেমন ভাবে কাটছে আমার? আমাকে কি একেবারেই ভুলে গেছিস?" --"কি আর বলবো! তুই তো তোর দুঃখের কথা বলেই খালাস। যে অভিযোগগুলো আমার ওপর চাপিয়ে দিলি সেগুলোতো আমিও করতে পারি।তবে কতগুলো অর্থহীন শব্দের বোঝা চাপিয়ে আমি তোকে দোষী করতে চাই না। তাই আজ আর আমার বলার মত কিছু নেই। আমাকে কাল সকালেই বেড়িয়ে যেতে হবে। পরে নিশ্চয়ই তোর সাথে দেখা হবে। তখন তোর প্রেমের বাকি গল্পটা শুনব কেমন। এখন বাড়ি ফিরতে হবে, চল।" রাগ, দুঃখ, অভিমান সুমিতাকে এমনভাবে ঘিরে ধরেছে যে সেই মুহূর্তে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আয়ানের সামনে থেকে দুরে চলে যেতে চাইছে। ওর স্বপ্নের সাজানো বাগান যেন এক মুহূর্তের ঝড়ে তছনছ হয়ে গেল। চোখের সামনে তখন ছোট্ট মিঠির মুখটা ভাসছে। এতদিন ধরে সুমিতা মনে মনে কত স্বপ্ন দেখেছে। মিঠি তার ছোট্ট পরী, জীবনের একমাত্র স্বপ্ন। তার কাছ থেকেও দুরে সরে রয়েছে শুধুমাত্র আয়ানের অপেক্ষায়। আজ সব শেষ হয়ে গেল।

আয়ান লন্ডন চলে যাবার পর সুমিতা যখন নিজের শরীরে নতুন প্রাণের ছোঁয়া পায় তখন অনেক চেষ্টাচরিত্র করে উত্তরবঙ্গের বালুরঘাটে ট্রান্সফার নিয়ে চলে যায়। নিজের ট্রেনিংয়ের সময় ওখানে একটা পাবলিক হেলথ সেন্টারে প্রায় মাস ছয়েক ছিল। তখন ওখানকার "চার্মিং হার্ট অরফানারিজ" হোমের একজন মাদার মারিয়া'র সাথে পরিচয় হয়েছিল। নিজের শারীরিক অবস্থার পরিবর্তনের কথা ভেবেই সুমি ওই অরফান হোমের মাদারের সাথে যোগাযোগ করে। হেলথ সেন্টারে ডক্টরর্স কোয়ার্টারে নিজের সুবিধামত সব গুছিয়ে নিয়ে মাদারের সাথে দেখা করে সুমিতা।

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register