গল্পেরা জোনাকি তে রীতা চক্রবর্তী (পর্ব - ২০)
নীল সবুজের লুকোচুরি
--- সেটা কখনোই হতে দেবে না সুমি। ভাবতে ভাবতেই নিজে এগিয়ে এসে টেবিল রেডি করতে শুরু করে। মিঠিও মায়ের সাথে এগিয়ে আসে।
----------
মিঠির মনে আজ এক আকাশ আনন্দ। আজ যেন মন কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে। কেন যে এতো ভালো লাগছে তা নিজেও জানে না। তবে জোয়ারে যেমন নদী অকারণে ছলাৎ ছলাৎ শব্দ করে বয়ে যায় মিঠির মনেও আজ ঠিক তেমনি করেই ছলকে পরছে আনন্দের বন্যা। এতদিন আপন বলতে ছিল শুধু মা। আজ ওর জীবনে গুরুত্বপূর্ণ আর একজনের উপস্থিতির আঁচ, যে ওর বাবা, যে কাছাকাছি থাকলেও এতদিন ছিল অচেনার আড়ালে। তাঁকে আজ ও দেখতে পাচ্ছে দুচোখ ভরে। এটা ওর স্বপ্নেরো বাইরে ছিল। মেয়েদের জীবনের প্রথম যে পুরুষ, যার গায়ের গন্ধ চিনে বড় হয়ে ওঠে সব মেয়েরাই, সেই স্রষ্টা পুরুষ বাবা আজ ওর সামনে। যদিও কোনোদিন 'বাবা'র কোলে ওঠা হয় নি, গায়ের গন্ধ টুকুও পায়নি তবুও আজ সামনে আছে, ভাবতেই ভীষণ ভালো লাগছে। অবশ্য ছোটবেলা থেকে ওর জীবনে একজন এমন আছে যাকে নিজের সব কথা বলা যায়, সেই 'বিলি' মানে বলবন্ত ওর পরম আপনজন। বয়সে একটু ছোট, তবুও মিঠির এক নম্বর গার্জেন বলতে বিলি। ওর সাথেই স্কুল যাওয়া, একই টিফিন শেয়ার করে খাওয়া, পড়ার বিষয়ে ছোটখাটো আলোচনা। মন খারাপের মেঘলা দিনে ওর সাথেই সময় কাটানো। মহা গুণী মানুষ সে। নানান রকম হাতের কাজের ওস্তাদ গুরুজী। অরফানারিজের ছোট ছেলেমেয়েদের প্রিয় বন্ধু। পশুপাখি, গাছপালা - ওকে সবাই চেনে। সবাই যে ওকে ভীষণ ভালোবাসে! আজকাল মাদারের পরম ভরসা বিলি'। তাইতো আশ্রমের সব দায়িত্ব বিলি' র ওপর ছেড়ে দিতে চান। সে অবশ্য এত কিছু ভাবে না। কাজ করতে পারলেই হল। ভালো খারাপ যাই হোক সেটা মাদার বুঝবেন, এমনটাই তার মনের কথা। এমন বন্ধু ক'জনার থাকে! অবশ্য বন্ধু ভাগ্যটা মিঠির খুব ভালো বলা যায়। সেবার যখন ফ্লোরিডায় গিয়েছিল তখন সেখানে ডঃ অরমানের সাথে পরিচয় হয়েছিল। সেও তো ওর থেকে ছোটই। তবে ওইযে ছোটরাই ওর ওপর গার্জেনগিরি করে। এখানেই তাই।
আসছি পরের পর্বে
0 Comments.