Mon 27 October 2025
Cluster Coding Blog

নজরুল ভাবনায় দীর্ঘ কবিতায় সজ্জ্বল দত্ত

maro news
নজরুল ভাবনায় দীর্ঘ কবিতায় সজ্জ্বল দত্ত

লোহা

(শ্রদ্ধা : কাজী নজরুল ইসলাম) ... তারপর আগুন আবিষ্কার চকমকি ঘষাঘষি ইড়া পিঙ্গলায় খিদে মাংসাশীর মাংস বুঝে সুষুম্নাসচল - ধারালো পাথরখণ্ডে মৃত্যুশব্দ কাছে ব্রহ্মাণ্ডে বিষের মহরত । শরীরে জড়ানো সুতো জঙ্গল ঢাকছে , আড়মোড়া ভেঙে সূর্য আলোয় গরম বাড়ছে সমুদ্রে নুন বাড়ছে কখন যে অতিবেগুনী ছুঁয়ে যাচ্ছে চোখ চাকা গড়াচ্ছে ফসল ফলছে মুদ্রা ... সোনা রুপো তামা ... রাজা মন্ত্রী ... রাজকোষ মন্দির-মসজিদ গাঁথনি প্রজার রক্তপাত । লোহাগরম ছ্যাঁকা ! কোনপ্রান্তে কোথায় কোন্ জগতে সংসারে তে-কোণা ব-দ্বীপ চেরা জরায়ু ফুলেফেঁপে হাজার-লক্ষ ডিগ্রী ... অদ্ভুত অঘটন ! তখনো মৌলবীর আমাকে প্রার্থনা ঘুমন্ত রাস্তাটুকু লম্বা লম্বা পায়ে আমিও পেরোতে চাই এতোটা ভাবোনি হিংস্র কেউটে-কালো ভেতরের কালিঝুলি এতোটা ফতুর-আত্মা ভাবতেও পারোনি । জোয়ান শরীর কেঁপে ছন্দে ছন্দে নীচু জ্বালাপোড়া যোনীমুখ , উনুনে গরম বীর্য জেলী-জেলী গর্ভকেশর । কাঁচালোহা ছটফট - - " আল্লা , পুরুষ চাই ! " - বোঁটাছেঁড়া স্তনকথা ক্ষতচিহ্নে ব্ল্যাকহোল । অশুভ অমঙ্গল সংকেত তারপর বজ্রপাত শিলাবৃষ্টি হিমঠাণ্ডা চরাচর নিকোনো মাটির ঘরে আজানে লোহাজন্ম পীরমন্ত্র ... শুভসূচনা । নাড়ি ছিঁড়ে ঢালুপথে জরায়ু ফাটিয়ে বাইরে লম্বা লোহার শিক অনন্ত শূন্যে লাফ ... গনগনে লাল আমি ডাঁশ ডাঁশ লালপিঁপড়ের ঢিবি ছুঁয়ে ঘেঁটে ভেঙেচুরে ( চুলকে টাটকা ঘা ) যত যা পুঁজরক্ত সবটুকু শুষে এই পবিত্র বিষের রাজ্যে তিনকাল এক করে ... " গাহি সাম্যের গান " কার কাঁধে কার হাত হিন্দু-মুসল.. প্রাণ ধুয়ে যাক শরিয়ত একই জরায়ু থেকে - লোহার কৈফিয়ত লোহাপেটা হাড়মাস যতই আগুন খায় বুক জ্বলে , জ্বলে শ্বাস বাঁধা টিকি ছিঁড়ে ফেলি আগুনে লাভায় মাথা শব্দের ঠেলাঠেলি জড়ো করো জঞ্জাল মুক্ত-রুদ্ধ দল কলাবৃত্ত কঙ্কাল খিদেশব্দ কিলবিল নাড়িপোড়া মাঝরাত মড়ায় অন্ত্যমিল আগুনে আমিষ পদ সন্তানে-শয়তানে ফোয়ারা বিলিতি মদ ডেকচিতে মহাকাল মাংস শুষছে তেল টগবগে কড়া ঝাল ! আমার ছোট্ট ঘর একদিন বুঝে নেবে গায়ে কোনো মরচে ছিল না । ইঁদুরের সংসারে ঝালাই মেশিনে আমি আগুনের ফুলঝুরি , চুম্বকে ঢুকে পড়ি গোখরো সাপের গর্তে । ঠাকুর্দার বাপের বাপের বাপের হাতের বাজুতে আমি মন্ত্রপুতঃ রাহুর মাদুলি , নাতির নাতির নাতির চওড়া কবজিতে ঝুলছি সাজানো প্রতীক বালা । কোটি কোটি বচ্ছর তীব্র তাপে ফেলে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে খাক ব্লাস্টফারনেস থেকে শুদ্ধ আমায় এনে পৃথিবীর ছাদ ঢালাই ... আকাশ পাতাল বায়ু বিন্দু নক্ষত্রলোক দূর থেকে ভেসে আয় -- ঘোর ভাঙে ধীরে ধীরে মেথর কুলিকামিন ভিখিরি ভ্যানওয়ালা অনন্ত ছায়াপথে ঘামলোকে একসাথে আলোয় পেছল গা । আদিম সুপ্তক্রোধ চাঁড়ালের হাড় খোঁজে , মড়াঘাঁটা তাজা হাড় । দগ্ধ হাড়ের মুখ এ' জন্মে ঘুরে এসে আমার লোহাকলম সে বুক সে হাত ছুঁয়ে মাথা ছুঁয়ে চোখ ছুঁয়ে আলোর কবিতা লেখে , রামধনু আলো-ঘাম প্রেমিক মেঘের কথা । সৃষ্টি আপন স্থিত স্থিতিমঞ্চে প্রলয় সংকেত লোহার খাতায় লেখা অনন্ত সবুজ ধানক্ষেত । মেঘকাব্যে অস্ত্রাগার অলৌকিকে সমস্ত লৌকিক শান্তি ... শান্ত লোহা আগুনে পুড়তে থাকা শিক । কঠিন কঠোর - শেষ ,অস্ত্র গলে জ্যোৎস্নাসাদা মোম পৃথিবী শিমুল তুলো মাখামাখি ভালোবাসা ওম । ভালোবাসা জাদুমন্ত্র : নরক পলাশ-লালে লাল ইমাম সন্ত সাধুর বকধর্ম মাটিধর্মে কাল । গাছে গাছে লাল নীল থোকা থোকা সাদা ফুল বন্ধ্যা অসাড় মাটি উপচে সোনালী ধান বৈশাখে কালো মেঘ বৃষ্টিপূর্বাভাস সেইদিন কাছে আয় ভরাপেটে ভিজি তবে আবীরে সূর্যোদয় নাখোদা-অযোধ্যা জুড়ে গাঁথনির খাঁজে খাঁজে কর্ণিক দিয়ে যদি চটকানো ভাতে ভাত ভোরের গঙ্গাপারে লোহার ঠাণ্ডাস্নান হৃদয় ডুবিয়ে জলে লোহামানুষ লোহাকলম তপ্ত লোহাজন্ম ত্রয়ী - জাগো নীচু , সম হই , খরায় বর্ষাগন্ধ কবিশব্দে ব্রহ্ম ছুঁই পরজন্ম সোনার : ' ছিনু সর্বহারা হবো সর্বজয়ী ' ।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register