Sun 26 October 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক ধারাবাহিক কথা সাগরে প্রদীপ গুপ্ত (পর্ব - ১২)

maro news
সাপ্তাহিক ধারাবাহিক কথা সাগরে প্রদীপ গুপ্ত (পর্ব - ১২)

সুন্দরী মাকড়সা

ঋষি কোনোদিনও গোয়েন্দা গল্প পড়তে পছন্দ করতো না। ছেলেবেলায় বিভূতি সমগ্র পড়তে গিয়ে চাঁদের পাহাড় পড়ে ফেলেছিলো। পড়ে ফেলেছিলো বললে ভুল হবে গিলে ফেলেছিলো। ব্যাস। ওই পর্যন্তই। এরপর আর কোনোদিনই কোনো গোয়েন্দা উপন্যাস বা গল্প কোনোকিছুই পড়তে চেষ্টা করেও পড়েনি ঋষি। পড়েনি মানে ভালো লাগেনি। অথচ এ কথা ঋষি কোনোদিনই কাউকে বলে উঠতে পারবে না যে শরদীন্দু অমনিবাস পড়তে গিয়ে ওর ঘুম পেয়েছে। ফেলুদাকেও বিশেষ পছন্দ না হওয়ায় ও ফেলুদা সমগ্র কিনেও ফেলে রেখেছে, পড়েনি। আর গোয়েন্দাগিরি! সে বিষয়ে এক হাস্যকর অভিজ্ঞতা আছে ওর। গ্রামের এক খুব কাছের সম্পর্কের দাদা কাজের কারণে কলকাতা এসে থাকতেন। সপ্তাহান্তে অথবা মাসান্তে তিনি বাড়ি ফিরতেন বটে কিন্তু সে মাত্র একদিনের জন্য। একরাত বাড়িতে থেকেই ফের কলকাতা রওনা হতেন। ঋষিরও গ্রামের বাড়িতে বিশেষ যাওয়া হয়ে উঠতো না। সেবার একবার গেলে পর সেই দাদার স্ত্রী, ঋষির কাছে এসে ইনিয়েবিনিয়ে তার সন্দেহের কথা ঋষিকে জানিয়ে একটু খোঁজ নিয়ে দেখতে বলেন। দাদার বিয়েতে বরযাত্রী হিসেবে গেছিলো ঋষি। অনেক ছোট ছিলো বলে ওকেই নিদবর হতে হয়েছিলো। সেদিন এই বৌদির কোলে বসার সৌভাগ্য হয়েছিলো ওর। বৌদিও দুষ্টুমি করে ঋষির গালে অনেকক্ষণ ধরে চুমু খেয়েছিলেন। সেই ঘটনার কথা ওর আজও মনে আছে, সেকারণেই ঋষি সেই মহিলাকে কথা দিয়েছিলো যে বিষয়টাকে খতিয়ে দেখবে। দুএকদিন তত্বতালাশ নিয়েছিলো ঋষি। কিন্তু ঘরে তালা ঝুলতে দেখে ফিরে এসেছে ঋষি। শেষে একদিন ঘর খোলা পেয়ে গুটিসুটি মেরে ঘরে ঢুকে পড়ে সে। তারপরই ঘটে গেছিলো সেই অঘটনটা। অন্ধকার ঘরে খাটের ওপর কেউ একজন শুয়েছিলো। তাকে জাপটে ধরতে তিনি হাউমাউ করে ওঠেন। পরে আলো জ্বেলে ঋষি যাকে দেখতে পায়, তিনি অন্য কেউ নন সেই বৌদি। স্বামীকে না জানিয়ে চলে এসে বিছানায় ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। ঘুমের তাড়নায় দোর বন্ধ করতেও ভুলে গেছেন। ব্যাস, জীবনে ওই একবারই গোয়েন্দাগিরি করতে যাওয়া। কিন্তু মুখবন্ধ করা খামটা খুলে রীতিমতো চমকে ওঠে ঋষি। গোটাগোটা হাতের অক্ষরে লেখা রয়েছে পাঁচটা শব্দ। --- সাবধান, টিকটিকিগিরির ফল অবধারিত মৃত্যু। খামটার ভেতর চিঠিটা বন্ধ করে ভাবতে বসে, যে লেখাটা কী ওকে উদ্দেশ্য করেই লেখা রয়েছে? কিন্তু ও আবার কখন গোয়েন্দাগিরি করতে বসেছিলো! কপালে বিন্দুবিন্দু ঘামের অস্তিত্বের টের পেলো ঋষি। ক্রমশ
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register